জাহিদুল আলম রাজন
ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাতের ভয়ে কক্সবাজারের পেকুয়ায় শনিবার (১৩ মে) রাতে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নেন প্রসূতি জয়নাব বেগম। কিছুক্ষণ পরই শুরু হয় তার প্রসববেদনা। কিন্তু আশেপাশে ছিল না কোনো গাড়ি। বিষয়টি জানতে পারেন পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর হায়দার। দ্রুত নিজের গাড়ি নিয়ে প্রসূতিকে হাসপাতালে নিয়ে যান তিনি। সেখানে ছেলে সন্তানের জন্ম দেন ওই গৃহবধূ। এমন মানবিক কর্মকাণ্ডে প্রশংসায় ভাসছেন ওসি ওমর হায়দার।
স্থানীয়রা জানান, শনিবার পেকুয়ার রাজাখালী ইউনিয়নের এয়ার আলী খান উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া এলাকার বাসিন্দাদের। সেখানে রাত ৯টায় আশ্রয় নেন রাজাখালীর বালাপাড়ার মোহাম্মদ আরাকানের স্ত্রী জয়নাব বেগম। রাত দেড়টার দিকে তার প্রসববেদনা শুরু হয়। সেখানে তখন উপস্থিত ছিলেন পেকুয়া থানার ওসি ওমর হায়দার। বিষয়টি জানতে পেরে প্রসূতিকে নিজের গাড়িতে করে ১০ কিলোমিটার দূরে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান ওসি ওমর হায়দার। ভোর চারটায় সেখানে সুস্থভাবে ওই প্রসূতি জন্ম দেন এক ছেলে সন্তান।
পেকুয়া থানার ওসি ওমর হায়দার বলেন,
‘কক্সবাজারে বিপদ সংকেত ঘোষণার পর এলাকার বাসিন্দাদের আশ্রয়কেন্দ্রে নিতে শুরু করি। রাতে রাজাখালী ইউনিয়নের এয়ার আলী খান উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্র পরিদর্শনে যাই। সেখানে গিয়ে খবর পাই এক গৃহবধূ প্রসববেদনায় কাতরাচ্ছেন। দুর্যোগের রাতে আশেপাশে কোনো বাহন ছিল না। তখন নিজের গাড়িতে তুলে উনাকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। তিনি ছেলে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। শুনে খুব আনন্দিত হয়েছি আমি।’
পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মুজিবুর রহমান বলেন, ‘ওসি একজন প্রসূতিকে নিয়ে এসেছিলেন। হাসপাতালের তার বিশেষ যত্ন নেওয়া হয়। তার নরমাল ডেলিভারি হয়েছে। বর্তমানে মা ও নবজাত সুস্থ আছেন।
সন্তান পাশে হাসিমুখে জয়নাব বেগম বলেন, ‘ওসি স্যারের প্রতি আমি অনেক কৃতজ্ঞ। উনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। উনি সৃষ্টিকর্তার মাধ্যম হয়ে এসেছেলিন বলেই আমি সন্তানের মুখ দেখতে পেয়েছি। নাহলে যে কি হতো!