আরিফুর রহমানঃ
মানলাম আপনি সাংবাদিক। ভালো পড়াশোনা আছে, ভালো লিখতে পারেন। এই ভালো লেখা দিয়ে পেট চলবে না। পেটের দায়ে বিজ্ঞাপনে কাজ করেন। নিজের চাহিদা, পরিবারের চাহিদা। এসব চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে ভুলে গেছেন সমাজেরও কিছু চাহিদা আছে। ভোর থেকে সন্ধ্যা অব্দি প্রত্যেক দপ্তরে দপ্তরে যান। পরিচয় দেন সাংবাদিক। হ্যাঁ, আপনি সাংবাদিক। একজন সাংবাদিকের কী কোন দায়িত্ব নেই? বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবেন? অনিয়ম, দুর্নীতি বন্ধে একটি লাইন কখনো লিখেছেন? আপনারা লিখেন না বলেই আমাদের মত অযোগ্যরা চেষ্টা করে যাই। বিয়ে, মুসলমানি, অভিনন্দন, ফুলের শুভেচ্ছা, যোগদান, বৃক্ষরোপণ। এর বাইরে কখনো কী একটি লাইন লিখেছেন? এই কাজটিও করেছেন শুধুমাত্র নিজের পকেটে সামান্য কয়টা টাকা আসার জন্য। আপনার ধন-সম্পদ টাকা-পয়সার আর কত দরকার? ফেনীর যে কয়েকজন ধন্যাঢ্য সাংবাদিক আছে তন্মধ্যে আপনিও একজন। পিয়নদেরও স্যার ডেকে, হাত কচলে কচলে হাতের রেখামুছে, উৎকোচ প্রথা চালু করে বিজ্ঞাপন নেন। বিজ্ঞাপনদাতারা আপনার প্রয়োজনে নয়; তাদের প্রয়োজনে আপনাকে স্যার বলে বিজ্ঞাপন দিবে। এটা ছাপানো দরকার তাদের, আপনার নয়। কুরআনের সূরা তাকাসুর পড়ে দেখুন। (আরো টাকা চাই, আরো ধনসম্পদ চাই। শুধুমাত্র কবরে গেলে বন্ধ করবেন।)
আপনাকে বলছি না কারো বিরুদ্ধে লেখেন; সাংবাদিকদের লেখনীর কারণে অনেক সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হয়েছে। বন্ধ হয়েছে অনিয়ম। একসময় দেখাগেছে অনিয়মকারীরা সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন। কারো বিরুদ্ধে লেখা মানে তার শত্রু হয়ে যাওয়া না। কারো বিরুদ্ধে লেখা মানে তাকে সচেতন করা। বেশি না হোক কম করে হলেও লেখেন। সত্য বলা, অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলা এবাদত মনে করে লেখেন। মানুষ আপনাকে অনেক ভালোবাসে। মানুষের ভালোবাসার প্রতিদানস্বরূপ লেখেন। আমি বিজ্ঞাপন চাওয়া বা নেয়ার বিরুদ্ধে কথা বলছি না। বিজ্ঞাপন খোঁজা যেন ছাপিয়ে না যায় সাংবাদিকতাকে।
আরিফুল রহমান
স্টাফ রিপোর্টার যমুনা টিভি