টাইমস ডেস্কঃ-
সকাল-দুপুর অথবা সন্ধ্যা যানজট যেন সারাদিনের নিত্যসঙ্গী ফেনী শহরবাসীর। প্রতিদিনের অসহনীয় যানজটে নষ্ট হচ্ছে মানুষের কর্মঘন্টা। ট্রাফিক পুলিশ দিশেহারা সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে।
সবচেয়ে বেশি যানজটের কবলে বেশি পড়তে হয় শহরের ট্রাংক রোড, শহীদ শহীদুল্লাহ কায়সার সড়ক ও রেল এলকার চালাচলকারীদের। এসব এলকায় দিনের অধিকাংশ সময় থাকে যানজট।
ট্রাংক রোড খেঁজুর চত্ত্বরের চারপাশের রাস্তাগুলোতে উল্লিখিত সময়ে থেমে থাকা রিকশা ও গাড়ির সারি দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হতে থাকে। সেই সঙ্গে রাস্তার অর্ধেক দখল করে থাকে সিএনজি-অটোরিকশা। এ কারণে জেলা শহর ফেনীতে এমন যানজট এখন নিত্যদিনের চিত্র।সংশ্লিষ্টদের দেওয়া তথ্য মতে, যত্রতত্র সিএনজি অটোরিকশা স্ট্যান্ড, অবৈধ গাড়ি পার্কিং, ফুটপাত দখল করে ভ্রাম্যমাণ দোকান, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল ও নাগরিক সচেতনতার অভাবে শহরে দিনদিন যানজট অসহনীয় হয়ে উঠছে।স্থানীয়রা জানায়, শহরের ট্রাংক রোড, শহীদ শহীদুল্লাহ কায়সার সড়ক, কলেজ রোড ও মিজান রোড এলাকায় যেসব বিপনী বিতান ও হোটেল-রেস্তোরা রয়েছে তার একটিরও নেই নিজস্ব পার্কিং ব্যবস্থা। যার ফলে যানজট লেগেই থাকে। অপরদিকে মরার ওপর ঘাঁ হিসেবে দেখা দিয়েছে সড়ক দখল করে ফল-সবজিসহ বিভিন্ন পণ্যের বিকি-কিনি। এসব দোকানীরা মনে করছে রাস্তা তাদের নিজস্ব সম্পত্তি।
ট্রাফিক বিভাগের তথ্য মতে, সড়কের ৩০ ভাগের বেশি দখল হয়ে আছে অবৈধ পার্কিং ও নানা ধরনের দখলদারদের হাতে। ফুটপাত হকারদের দখলে থাকায় প্রধান সড়কেই পায়ে হেঁটে চলেন শহরবাসী। ফলে যানজটের সঙ্গে আছে জনজট। অবৈধ সিএনজি অটোরিকশা প্রবেশ, ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বৃদ্ধিও যানজট বাড়ার জন্য দায়ী। তারা বলছেন, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ট্রাফিক পুলিশের কথা কেউ মানছেন না। এ জন্য তপ্ত রোদের মধ্যে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা শহরকে যানজটমুক্ত রাখতে কাজ করলেও আশানুরূপ ফল মিলছে না।যানজট নিরসন সংশ্লিষ্ট বিভাগের তথ্য মতে, শহরের প্রায় সবদিকের সংযোগ সড়কগুলোতে অবৈধ পার্কিং ব্যবস্থা আছে। যেখানে দেখা যায়, শহরের প্রবেশমুখে গুরুত্বপূর্ণ জেল রোড সংলগ্ন মাইক্রো-কার পার্কিং, জেলার উত্তরের দিক থেকে প্রবেশমুখে হাসপাতাল মোড়ে পরশুরাম, ফুলগাজী সিএনজি ও বাস স্টেশন, কলেজ রোডে ছাগলনাইয়া সিএনজি স্টেশন, রেলক্রসিং সংলগ্ন মুন্সিরহাট-হাসানপুর, মডেল থানা সংলগ্ন ফতেহপুর সিএনজি স্টেশন, মডেল স্কুল সংলগ্ন সোনাগাজীর সিএনজি-মিনিবাস পার্কিংয়ের জন্য দখল করেছে সড়কের অংশ।
এমন অপরিকল্পিত পার্কিং ব্যবস্থা সমাধান করতে না পারলে যানজট সমস্যা হবে জেলার মানুষের নিত্যদিনের সঙ্গী।সোনাগাজী থেকে ফেনী শহরে আসা রফিকুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি বলেন, অসুস্থতায় চিকিৎসার জন্য শহরে এসেছি। একদিকে যানজট অন্যদিকে অতিরিক্ত গরমে গাড়ির মধ্যে বসে থাকতে খুব কষ্ট হচ্ছে।ব্যাংক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, মেয়েকে স্কুল থেকে বাসায় নেওয়ার জন্য বের হয়েছি। কিন্তু রাস্তায় যাজটের কারণে এখনো স্কুলে পৌঁছাতে পারিনি। গত কয়েক দিন হাতে সময় নিয়ে বের হলেও নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে যেতে পারছি না। যানজটের সঙ্গে তীব্র গরমে বেশি কষ্ট হচ্ছে।আপসার হোসেন নামের এক রিকশাচালক বলেন, যানজটে বিরক্ত হয়ে অনেক যাত্রী রিকশা থেকে নেমে হেঁটে চলে যান। টাকা তো পাই না, সময়ও নষ্ট। প্রতিদিন দেড় থেকে দুই ঘণ্টা এভাবেই রাস্তায় কেটে যায়।এ ব্যাপারে ফেনী জেলা ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক মো. আনোয়ারুল আজীম মজুমদার বলেন, প্রধান সড়কে চলাচলের নিয়ম না থাকলেও তা অমান্য করে করে এখন ব্যাটারিচালিত রিকশাগুলো শহর দখল করেছে।
ডাম্পিং ব্যবস্থা না থাকায় জব্দও করা যাচ্ছে না। এছাড়া বর্তমান পরিস্থিতিতে গাড়ি চালকরা ট্রাফিক পুলিশের কথা মানছেন না। আইন ভঙ্গ করে যত্রতত্র গাড়ি চালাচ্ছেন, রাস্তায় গাড়ি পার্কিং করছেন।তিনি বলেন, ট্রাফিক পুলিশের পক্ষে একা যানজট নিরসন করা সম্ভব না। এ জন্য সব শ্রেণী-পেশার মানুষকে সচেতন হয়ে একযোগে কাজ করতে হবে।