জাহিদুল আলম রাজন
অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখর ফেনী সদর উপজেলার শর্শদি ইউনিয়নের জাহানপুর জাম্বারা দীঘি। দিনভর চলে জলকেলি, খুনসুটি আর তাদের কিচিরমিচির শব্দ, কখনো ঝাঁক বেঁধে নান্দনিক কসরতে ডানা মেলে নীল আকাশে ওড়োউড়ি। অগণিত পরিযায়ী পাখির কিচিরমিচির শব্দে ঘুম ভাঙছে এলাকাবাসীর। পাখির এ কলতান উপভোগ করতে সকাল-বিকেল ভিড় করছেন পাখিপ্রেমীরা। স্থানীয় প্রশাসন বলছে, অতিথি পাখিদের সুরক্ষা দিতে কাজ করছে তারা।
পানকৌড়ি, বালি হাস, রাঙ্গা ময়ূরী, ছোট স্বরালী পরিযায়ী পাখির এ বিচরণ ক্ষেত্রটি ডিসেম্বরের শেষের দিক থেকেই শুরু হয়। শীতপ্রধান এলাকা থেকে আসা এসব অতিথি পাখি অনুকূল পরিবেশ আর প্রয়োজনীয় খাবার নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়ায় আস্তনা গড়ে এই দীঘিতে। গত বছরের চেয়ে এবার বিপুল পরিমাণ পাখির আগমনে তৈরি হয়েছে অন্য এক পরিবেশ। স্থানীয়রা বলছেন, এসব অতিথি পাখির কিচিরমিচির শব্দে ঘুম ভাঙছে তাদের।
স্থানীয় কলেজ ছাত্র সালমান এ মেহবুব জানান, প্রতি বছরের মতো এবারও এখানে অতিথি পাখি দেখতে এসেছি। এখানে আসলে খুবই ভালো লাগে। পাখির ডানা ঝাপটানো মুগ্ধ করে আমিসহ আগত দর্শনার্থীদের। অনেকেই আবার মোবাইলের ফ্রেমে পাখিদের আটকাতে ব্যস্ত।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ মেম্বার জিয়া উদ্দিন বলেন, দীর্ঘদিন যাবত আমরা অতিথি পাখিদের নিরাপত্তা দিয়ে আসছি, যাতে পাখিদের কেউ ক্ষতি না করতে পারে। এ কারণে দিঘীটি পাথিদের নিরাপদ আবাসস্থলে পরিণত হয়েছে। তেমনিভাবে এখানে দর্শনার্থীগণ আসলে তাদের বসার ও দেখার সুব্যবস্থ করে দিয়েছি।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জানে আলম ভূঁইয়া বলেন, কেউ যাতে পাখি ধরতে না পারে, তাই আমরা এখানে স্থানীয়রা সজাগ রয়েছি। আমরা সব সময় পাহারা দিয়ে পাখিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করি যাতে কেউ পাখিদের ডিস্টার্ব না করে।
স্থানীয় পাখিপ্রেমী আনোয়ার হোসেন বলেন, এ দীঘিতে প্রায় ১০ প্রজাতির অতিথি পাখির আগমন ঘটেছে এবার। ডিসেম্বরের শেষ থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত এসব পাখি এ দিঘীতে অবস্থান করে।
অতিথি পাখিদের নিরাপত্তা বিষয়ে ফেনী জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ-উল হাসান বলেন, শীতে ফেনীতে অতিথি পাখি আসে এটি আমাদের জন্য শুভকর। এখানে অতিথি পাখিদের নিরাপত্তার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ পাখিদের পরিবেশ বিনষ্ট করতে চাইলে আমরা কঠোর ব্যবস্থা নিবো।